সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
সূর্য থেকে পৃথিবীর চেয়ে ৩০ গুণ দূরে অবস্থিত গ্রহ নেপচুন। গ্রহটি সৌরজগতের দূরবর্তী, অন্ধকার অঞ্চলে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এত দূর থেকে সূর্য এতই ছোট এবং ক্ষীণ যে এই দৈত্যাকার গ্রহের কড়া দুপুর পৃথিবীর আবছা গোধূলির মতো। নেপচুনে সূর্যের আলো-তাপ কম পৌঁছায়।
নেপচুন সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ যা খালি চোখে দেখা যায় না এবং এটি আবিষ্কারের আগে গণিতের হিসাব দ্বারা প্রথম ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। ১৮৪৬ সালে আবিষ্কারের পর থেকে বিশাল গ্রহটি তার প্রথম ১৫৬-বছরের কক্ষপথ সম্পন্ন করে ২০১১ সালে।
নেপচুনকে এর অভ্যন্তরের রাসায়নিক গঠনের কারণে একটি বরফ দৈত্য বা আইস জায়ন্ট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। গ্যাস জায়ান্ট বৃহস্পতি এবং শনির তুলনায়, গ্রহটি হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের চেয়ে ভারী উপাদানে অনেক বেশি সমৃদ্ধ।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ নেপচুনের বলয় এবং চাঁদের অসাধারণ চিত্র ধারণ করেছে। গত ১২ই জুলাই ২০২২-এ ওয়েবের NIRCam ব্যবহার করে ছবিটি ধারণ করা হয়।
ক্রেডিট: NASA, ESA, CSA, STScI pic.twitter.com/LvboF0SKvj
— বিজ্ঞানবার্তা – BigganBarta (@bigganbarta) September 21, 2022
২০২০ সালে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ থেকে প্রাপ্ত ছবিতে নেপচুনের নীল চেহারায় তার একটি প্রমাণ। অল্প পরিমাণে গ্যাসীয় মিথেনের কারণে এরকম নীল রঙের দেখা যায়।
নাসান ভয়েজার ২ একমাত্র মহাকাশযান যা নেপচুনকে কাছ থেকে পরিদর্শন করেছে। যানটি ১৯৮৯ সালে নেপচুনের কাছ দিয়ে উড়ে সৌরজগত বাইরে চলে যায়।
নেপচুন সিস্টেম বিশেষজ্ঞ এবং ওয়েবের বিজ্ঞানী Dr. Heidi Hammel বলেন,
“আমরা শেষবার নেপচুনের অস্পষ্ট, ধূলিময় রিংগুলি দেখেছি ৩২ বছর হয়ে গেছে। এই প্রথম আমরা জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের কল্যানে তাদেরকে ইনফ্রারেডে দেখেছি। ওয়েবের অত্যন্ত স্থিতিশীল এবং ছবির অসাধারণ গুণমান নেপচুনের খুব কাছাকাছি খুব ক্ষীণ রিংগুলি সনাক্ত করতে সক্ষম করেছে।”
ওয়েবের নিয়ার-ইনফ্রারেড ক্যামেরা (NIRCam) যেহেতু ০.৬ থেকে ৫ মাইক্রনের নিয়ার-ইনফ্রারেড পরিসরে পর্যবেক্ষণ করে, তাই ওয়েবের তোলা ছবিতে নেপচুনকে নীল দেখায় না।
এমনকি, মিথেন গ্যাস এতই বেশি লাল এবং ইনফ্রারেড আলো শোষণ করে যে গ্রহটি এই নিয়ার-ইনফ্রারেড তরঙ্গদৈর্ঘ্যে বেশ অন্ধকার দেখায়। কিন্তু যেখানে উচ্চ-উচ্চতায় মিথেন-বরফের মেঘ উপস্থিত রয়েছে সেখানকার উজ্জলতা ঠিক দেখায় যেহেতু সেখানকার কঠিন রূপে থাকা মিথেন গ্যাস আলো শোষণ করতে পারে না। ছবিতে লক্ষ করলে দেখা যাবে যেই স্থানে মিথেন গ্যাস উপস্থিত সেই অঞ্চল তুলনামূলক অন্ধকার।
নেপচুনের ১৬৪-বছরের কক্ষপথের অর্থ হল এর উত্তর মেরু জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে দৃশ্যমান নয়, তবে ওয়েবের ছবিগুলি সেই অঞ্চলে উজ্জ্বলতার ইঙ্গিত দেয়। ওয়েবের ছবিতে দক্ষিণ মেরুতে একটি পূর্ব পরিচিত ঘূর্ণি স্পষ্ট।
সাথে ওয়েব নেপচুনের ১৪টি পরিচিত চাঁদের মধ্যে সাতটিকেই ক্যামরা বন্দী করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বড়, অস্বাভাবিক এবং বিখ্যাত চাঁদ ট্রাইটন। ঘনীভূত নাইট্রোজেনের হিমায়িত আভায় আচ্ছাদিত ট্রাইটন উপগ্রহে আঘাতকরা সূর্যালোকের গড় ৭০% প্রতিফলিত হয়।
নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।
এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।