সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের মহলে একটি উজ্জ্বল নতুন ধূমকেতু সম্পর্কে গুঞ্জন উঠেছে। ধূলিকণা এবং বরফের বলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে C/2023 P1 নাম দেওয়া হয়েছে, তবে এটিকে ‘ধূমকেতু নিশিমুরা’ও বলা হচ্ছে, জাপানি ফটোগ্রাফার হিদেও নিশিমুরা, যিনি এটি প্রথম দেখেছিলেন তার নাম অনুসারে। আজ আপনিও দেখার সুযোগ পেতে পারেন খোলা আকাশে ৪৩৭ বছরে একবার আসা এই ধূমকেতুকে।
কীভাবে ধূমকেতুটি আবিষ্কৃত হলো?
হিদেও নিশিমুরা ১২ আগস্ট, ২০২৩ তারিখে তার একটি ক্যানন ক্যামেরা দিয়ে সূর্যোদয়ের আগে আকাশের ছবি তোলার সময় ধূমকেতুটি ধারণ করেছিলেন। ছবি তোলার সময় ধূমকেতুটি সূর্য থেকে ১৪ কোটি ৭৯ লাখ কিলোমিটার দূরে ছিলো। তিনি Central Bureau for Astronomical Telegrams (CBAT)-এ এই ছবিটির কথা জানান, যা সারা বিশ্বের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ব্যাপারটা সম্পর্কে অবহিত করেছিল। উল্লেখ্য, এটা তার তৃতীয় ধূমকেতু আবিষ্কার।
Vishnu Reddy, অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গ্রহ বিজ্ঞানী যিনি একজন অপেশাদার পর্যবেক্ষক এটি খুঁজে পাবার ব্যাপারে বেশ অবাক হয়েছিলেন।
“কিছু স্বতন্ত্র অপেশাদার পর্যবেক্ষক ধূমকেতু খুঁজে পেয়েছে, সে যুগ অনেক আগেই চলে গেছে বলে মনে করা হয়,” Dr. Vishnu Reddy বলেন, কারণ বেশিরভাগ ধূমকেতু পৃথিবীতে এবং মহাকাশে থাকা বৈজ্ঞানিকভাবে পরিচালিত স্বয়ংক্রিয় জরিপ দ্বারা সনাক্ত করা হয়। ঠিক এভাবেই বিজ্ঞানীরা ২০২০ সালে ধূমকেতু NEOWISE আবিষ্কার করা হয়েছিলো।, যার নামকরণ করা হয়েছিল NASA যে স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে এটি সনাক্ত করা হয়েছিলো, Near-Earth Object Wide-field Infrared Survey Explorer.
কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যখন অতীতের তথ্য বিশ্লেষণ করেন, তখন তারা এমন পর্যবেক্ষণ খুঁজে পান যাতে ধূমকেতু নিশিমুরা অন্তর্ভুক্ত ছিল কিন্তু কিছু কারণে তাদের স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম এ ব্যাপারে কোনো কোনো সিগন্যার দেয়নি। “এর কারণ হতে পারে রেশিরভাগ টেলিস্কোপ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত যেখানে বছরের বেশিরভাগ সময়ই আকাশ চমৎকার ভাবে দেখা গেলেও গ্রীষ্মের শেষের দিকে আকাশ অপরষ্কার থাকে।” জানান Dr. Reddy.
আপনি কীভাবে ধূমকেতুটি দেখতে পাবেন?
Dr. Reddy মতে, ধূমকেতু নিশিমুরা ধরার সেরা সময় হল আজ সকালে সূর্য ওঠার ৯০ মিনিট আগে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২ টার আশেপাশে)। কেননা এসময় উজ্জ্বলতা ঔ সময়ে সবচেয় বেশি থাকবে।দুপুরে তো ধুমকেতু দেখতে পাওয়াটা খুবই কষ্টকর তবে বাংলাদেশে সন্ধ্যার পরপর সময়ে খুব ভালোভাবে Leo নক্ষত্রমণ্ডলে নজর রাখলে দেখা দিতে পারে। আপনি আরও ভাল দেখার জন্য দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করতে পারেন।
ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ প্রজেক্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী Gianluca Masi বলেছেন যে আগামি সপ্তাহ সূর্যের আলোয় হারিয়ে যাওয়ার আগে উত্তর গোলার্ধ থেকে ধূমকেতু দেখার ‘শেষ, সম্ভাব্য সম্ভাবনা’ থাকবে।
ধূমকেতুটি প্রায় ৪৩৭ বছর আগে সর্বশেষ পৃথিবী পরিদর্শন করেছিল যা গ্যালিলিও টেলিস্কোপ আবিষ্কার করার প্রায় এক বা দুই দশক আগে – এবং পরের বার এটি পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হবে ২৪৫৮ সালে।
ক্রেডিট: NASA/JPL
ধূমকেতুটি দেখতে কেমন হবে?
একটি ধূমকেতুর বায়ুমণ্ডলে ডিকার্বন নামক একটি অণু অর্থাৎ দুটি কার্বন পরমাণু একসাথে আবদ্ধ থাকে। যখন ডাইকার্বন ভেঙে যায়, তখন এটি একটি সবুজ আভা তৈরি করে। বিশ্বজুড়ে মানুষ ইতিমধ্যেই ধূমকেতু নিশিমুরার পান্না রঙের ছবি দেখেছে, অনেকে ছতি তুলেছে। তবে ছবির মতো এত বড় হবে না, বেশ ছোট আকৃতির হবে।
প্রতিদিন আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।