সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
২০২২ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারটি যৌথভাবে আলাঁ আস্পে (Alain Aspect), জন এফ. ক্লাউজার (John F. Clauser) এবং আন্টন সাইলিঙার (Anton Zeilinger)-কে এনট্যাঙ্গলড ফোটন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ‘কোয়ান্টাম ইনফরমেশন সায়েন্স’-এ (যা কোয়ান্টাম প্রযুক্তির একটি নতুন যুগের ভিত্তিপ্রস্তর) তাদের যুগান্তকারী কাজের জন্য দেওয়া হয়েছে।
জেলিঙ্গার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
“আমি এখনও অনেকটা হতবাক, তবে সেটা খুব ইতিবাচক হতবাক,”
তিনজন বিজয়ীকেই কোয়ান্টাম মেকানিক্সে তাদের মৌলিক অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়ে। তাদের কাজের মধ্যে ছিলো এনট্যাঙ্গলড ফোটনের ওপর পরিক্ষা চালানো। এনট্যাঙ্গলড ফোটনে দেখা যায় যে ‘তথ্য’ অসীম দূরত্বে অবিলম্বে পৌঁছাতে পারে, তথাকথিত কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশনে যাকে বলে।
বিজয়ীদের প্রত্যেকেই পরীক্ষাই ১৯৬৪ সালে পদার্থবিজ্ঞানী জন বেল দ্বারা প্রথম প্রস্তাবিত একটি গাণিতিক উপপাদ্যের একটি বাস্তব-জীবনের পরীক্ষা চালায়। গাণিতিক উপপাদ্যেটিকে বেলের উপপাদ্য বলা হয়, যা কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিউটনিয়ান মেকানিক্সের বিলিয়ার্ড-বল মডেলের মতো কিনা তা পরিমাপ করার চেষ্টা করে।
বেলের করা প্রস্তাবে, ফলাফল প্রভাবিত করতে পারে এমন অন্য যেকোন কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন একটি সিস্টেমে দুটি এনট্যাঙ্গলড কণার বৈশিষ্ট্যকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন একজন পর্যবেক্ষক অসাবধানতাবশত পরিমাপের মাধ্যমে একটি এনট্যাঙ্গলড কণা প্রভাবিত করতে পারে। অর্ধাৎ মাপতে গিয়েও ঝামেলা, গাণিতিক অসমতা তৈরি হয়ে যায়।
১৯৭২ সালে, জন এফ. ক্লজার এবং তার সহকর্মী স্টুয়ার্ট জে. ফ্রিডম্যান প্রথম ক্যালসিয়াম পরমাণুর সংঘর্ষ থেকে আসা এনট্যাঙ্গলড ফোটন পরিমাপ করে বেলের অসমতা পরীক্ষা করেছিলেন।
ক্লজার এবং ফ্রিডম্যানের ডেটা বেলের অসমতা লঙ্ঘন করে। পরীক্ষাটি প্রথম বাস্তব-বিশ্বের উদাহরণ এবং এর পরিসংখ্যানগত নির্ভুলতার উচ্চ স্তরে। যা বোঝা যায় যে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সত্যিই নন-লোকাল প্রভাব থাকতে পারে। তবে, এই পরীক্ষায় কিছু ত্রুটি ছিল, যার মধ্যে বেলের মূল ধারণা থেকে অনেক পার্থক্য অন্যতম।
⚠️ ব্রেকিং নিউজ:
২০২২ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান অ্যালাইন অ্যাসপেক্ট, জন ক্লজার এবং অ্যান্টন জেইলিংগার তাদের এনট্যাঙ্গলড ফোটন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ‘কোয়ান্টাম তথ্য বিজ্ঞান’ শাখার ভুমিকা পালন করার জন্য।
ছবি: Niklas Elmehed/Nobel Prize Outreach pic.twitter.com/J46KZ3Omb4
— বিজ্ঞানবার্তা – BigganBarta (@bigganbarta) October 4, 2022
প্রায় এক দশক পরে, ১৯৮০ সালে, ফ্রান্সের প্যারিস-স্যাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালাইন অ্যাসপেক্ট এবং তার সহকর্মীরা অনেক বেশি নির্ভুলতার সাথে আবার বেল অসমতা পরিমাপ করতে সক্ষম হন। ডিটেক্টরে পৌঁছানোর আগে কোন ফোটন পরিমাপ করতে হবে তা নির্ধারণ করতে দলটি একটি এলোমেলো স্যুইচিং ডিভাইস ব্যবহার করেছিল। যাতে কোনো পর্যবেক্ষকের প্রভাব ফেলতে না পারে।
১৯৮৯ সালে, অস্ট্রিয়ায় অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ ভিয়েনার অ্যান্টন জেইলিঙ্গার এবং তার সহকর্মীরা বেলের অসমতাকে দুটি এনট্যাঙ্গলড কণার বাইরে তিন বা ততোধিক এনট্যাঙ্গলড কণার অবস্থায় প্রসারিত করেছিলেন যাকে GHZ স্টেট বলা হয়। এটি কোয়ান্টাম কম্পিউটিং সহ অনেক কোয়ান্টাম প্রযুক্তির জন্য একটি মূল স্তম্ভ গঠন করে, যা কোয়ান্টাম বিট বা কিউবিট তৈরি করতে GHZ অবস্থা ব্যবহার করতে পারে।
প্রেস কনফারেন্সের সময় পদার্থবিদ্যার নোবেল কমিটির সদস্য থর্স হ্যান্স হ্যানসন বলেন,
“আমরা ফিরে যেয়ে সেই ব্যক্তিদের সম্মান করতে চেয়েছিলাম যারা [কোয়ান্টাম ইনফরমেশন সায়েন্স] ভিত্তি স্থাপন করেছেন।”
নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।
এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।