সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
এক্সোপ্ল্যানেট খোঁজার সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি মধ্যে একটি হল পৃথিবীর মতো বসতিপূর্ণ গ্রহগুলির অনুসন্ধান। যেহেতু সেসব গ্রহ বহু বহু দূরে এবং তাদের সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয় তাই তাদেরকে নিয়ার-ইনফ্রারেড এবং মিড-ইনফ্রারেড স্পেকট্রায় গ্রহের বায়ুমণ্ডলে এমন রাসায়নিক যৌগের খোঁজা হয় যা জীবনের নির্দেশ করতে পারে। অর্থাৎ রিমোট বায়োসিগনেচারের মাধ্যমে সনাক্ত করা।
বসতিপূর্ণ কোনো গ্রহ থাকলে সেখানকার বায়ুমণ্ডলীয় স্পেকট্রায় অবশ্যই গ্যাসের একটি শক্তিশালী আদান-প্রদান সহ পুরো গ্রহ জুরে বায়োস্ফিয়ার থাকতে হবে। অর্থাৎ অবশ্যই সেখানে জীবের বায়োসিগনেচার থাকতে হবে; জীবের তৈরি করা গ্যাসের উপস্থিতি। এছাড়াও সেই সিগনেচার এমন হতে হবে যা দূরবর্তী প্রযুক্তির সাহায্যে সনাক্ত করা যায়।
রিভারসাইড ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী Dr. Eddie Schwieterman বলেন,
“অক্সিজেন এবং মিথেনকে বায়োসিগনেচার হিসেবে অনেক চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছে। কম গবেষকরা নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেছেন, কিন্তু আমরা মনে করি তা ভুল হতে পারে।”
Dr. Schwieterman এবং তার সহকর্মীরা নির্ধারণ করেছেন যে পৃথিবীর অনুরূপ একটি গ্রহে সেখানকার জীবেরা কতটা নাইট্রাস অক্সাইড উৎপাদন করতে পারে।
তারপরে তারা বিভিন্ন ধরণের নক্ষত্রের চারপাশে সেই গ্রহের মডেল অনুকরণ করে একটি মডেল এবং নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ নির্ধারণ করেন যা জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের দ্বারা সনাক্ত করা যেতে পারে।
ক্রেডিট: NASA/JPL-Caltech
Dr. Schwieterman জানান
“Trappist-1-এর মতো একটি নক্ষত্র ব্যবস্থায়, পৃথিবীর মতো পাথুরে গ্রহের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণ করার জন্য নিকটতম এবং সর্বোত্তম সিস্টেম, আপনি কার্বন ডাই অক্সাইড বা মিথেনের সাথে তুলনীয় মাত্রায় নাইট্রাস অক্সাইড সম্ভাব্যভাবে সনাক্ত করতে পারেন।”
জীব একাধিক উপায়ে নাইট্রাস অক্সাইড তৈরি করতে পারে। অণুজীব ক্রমাগত অন্যান্য নাইট্রোজেন যৌগকে নাইট্রাস অক্সাইডে রূপান্তরিত করছে যেই প্রক্রিয়াটি তাদের দরকারী সেলুলার শক্তি প্রদান করতে পারে।
তবে কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে, এই গ্যাসটি বায়ুমণ্ডলে সনাক্ত হলেও সেটা জীবন নির্দেশ করে না।
উদাহরণস্বরূপ, বজ্রপাতের মাধ্যমে অল্প পরিমাণে নাইট্রাস অক্সাইড তৈরি হয়। কিন্তু নাইট্রাস অক্সাইডের পাশাপাশি, বজ্রপাত নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডও তৈরি করে, যা জ্যোতির্জীববিদদের সেটা জীবে তৈরি করেছে নাকি নির্জীব আবহাওয়া বা ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে সেটা বের করতে সাহায্য করবে।
অন্যরা যারা নাইট্রাস অক্সাইডকে বায়োসিগনেচার গ্যাস হিসাবে বিবেচনা করেছেন তারা প্রায়শই এমন এক সিন্ধান্তে আসেন যে এই গ্যাস এত দূর থেকে সনাক্ত করা কঠিন হবে।
Dr. Schwieterman এ ব্যাপারে বলেন,
“K এবং M বামন নক্ষত্রের মতো সাধারণ নক্ষত্র একটি হালকা বর্ণালী তৈরি করে যা আমাদের সূর্যের তুলনায় নাইট্রাস অক্সাইড অণুকে ভাঙতে কম কার্যকর। এই দুটি প্রভাব একত্রিত হয়ে একটি বহির্জাগতিক পৃথিবীতে এই বায়োসিগনেচার গ্যাসের পূর্বাভাসিত পরিমাণকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।”
নতুন গবেষণার গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে, অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্টদের এখন নাইট্রাস অক্সাইডের মতো বিকল্প বায়োসিগনেচার গ্যাসগুলি বিবেচনা করার সময় এসেছে কারণ ওয়েব শীঘ্রই Trappist-1 সিস্টেমের পৃথিবীর মতো পাথুরে গ্রহের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে তথ্য পাঠাতে পারে।
———
Evaluating the Plausible Range of N₂O Biosignatures on Exo-Earths: An Integrated Biogeochemical, Photochemical, and Spectral Modeling Approach. The Astrophysical Journal, 2022; 937 (2): 109. DOI: 10.3847/1538-4357/ac8cfb
প্রতিদিন আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।