সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
প্রথম পূর্ণাঙ্গ বেসরকারি বা ব্যাক্তিগত মহাকাশীয় মানমন্দিরটি দেশের জ্যোতির্বিদ্যা চর্চায় এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞান সংগঠক ও ব্যবসায়ী শাহজাহান মৃধা বেনু নিজস্ব অর্থায়নে মানমন্দিরটি নিজের আবাসিক জমিতে প্রতিষ্ঠা করেন। বেনু প্রদত্ত নকশা ও প্রযুক্তিতে এই অলাভজনক মানমন্দিরের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন,
“জ্যোতির্বিদ্যা গবেষণায় আগ্রহীরা কিছুদিনের মধ্যে এখানে গবেষণা করার সুযোগ পাবেন।”
রাজধানীর জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের ছাদে দেশের প্রথম মানমন্দির স্থাপন করেন বেনু। এছাড়াও ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বিজ্ঞান ক্লাব ‘অনুসন্ধিৎসু চক্র’-এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১৮ বছর অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন শাহজাহান মৃধা বেনু। বর্তমানে তিনি সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
শীঘ্রই সরেজিমেন ঘুরে দেখা যাবে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বাঘের বাজার সংলগ্ন বেনুর ভিটায় প্রায় ৮০ বিঘা জায়গায় অবস্থিত চারতলার ভবনের উপরের এই অবজারভেটরিটি। প্রাথমিক পর্যায়ে ১৪ ইঞ্চি meade-Cassegrain টেলিস্কোপের সাহায্যে রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে এখানে আরো অত্যাধুনিক ১০০ ইঞ্চি ব্যাসের রিফ্লেক্টর টেলিস্কোপ সংযুক্ত করা হবে। মানমন্দিরে রেডিও টেলিস্কোপ স্থাপনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান বেনু।
সম্প্রতি মানমন্দিরটি পরিদর্শন করেন নাসার সাবেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মোরেনো ভ্যালি কলেজের পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যার অধ্যাপক ড. দীপেন ভট্টাচার্য ও মহাকাশ গবেষক ড. মাকসুদা আফরোজ।
ড. দীপেন বলেন,
“বিজ্ঞানপ্রেমীদের নিয়ে দেশে যে ব্যক্তিরা জ্যোতির্বিদ্যা চর্চা শুরু করেছিলেন তাদের মধ্যে বেনু অন্যতম। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পারবর্তী যুগে সমস্ত জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত ঘটনার গবেষণা, পর্যবেক্ষণ এবং উদযাপনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন,
“ব্যক্তি উদ্যোগে এতো বড় কাজ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। জ্যোতির্বিদ্যার প্রতি বেনু সাহেবের এমন আন্তরিকতা সত্যিই আমাদের উৎসাহিত করে। আগামীতের এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও গবেষকরা বেশ উপকৃত হবে।”
বেনু আশা করেন যে, ভবিশ্যতে পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা অ্যাস্ট্রো অবজারভেটরির মাধ্যমে NASA, CNSA, ESA এবং CSA-এর সাথে নিয়মিত মহাকাশ পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণা পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।
অবজারভেটরির প্রতিষ্ঠাতা বেণু বলেন,
“মহাকাশ গবেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার, গ্রন্থাগার থাকার সুব্যবস্থা থাকবে। অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফির জন্যও থাকবে নানান সুযোগ সুবিধা। জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি আর্চারি, মাউন্টেনিয়ারিং ও উড্ডয়ন বিদ্যার প্রশিক্ষণের সুযোগ সুবিধাও থাকবে।”
বেনু বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রো ফাউন্ডেশনের সভাপতি। অনুসন্ধিৎসু চক্র (Anushandhitshu Chokro Science Organization) এবং বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রো ফাউন্ডেশনে নতুন এই অ্যাস্ট্রো অবজারভেটরি বা মহাকাশীয় মানমন্দিরটি পরিচালনা করবে।æ
নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।
এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।