সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
বাংলাদেশে প্রায় ২২০টি ট্যানারি রয়েছে। ট্যানিং প্রক্রিয়ায় ২০০ টিরও বেশি রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে ক্রোমিয়াম, পলিক্লোরিনেটেড বাইফেনাইল, সালফাইড, নাইট্রেটসহ আরও অনেক ক্ষতিকারক উপাদান থাকে। ক্রোমিয়ামসহ জিংক, লেড, ক্যাডমিয়াম, তামা, পারদ, নিকেল ইত্যাদি ভারী ধাতু পরিবেশে মিশে দূষণ ঘটায়। এতে নদী ও জলাশয় দূষিত হয় এবং জলজ ও স্থলজ প্রাণীর ক্ষতি হয়। এ দূষণে মানুষের ত্বক রোগসহ ক্যান্সারের ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়ে।
সম্প্রতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষকরা অপরিশোধিত ট্যানারি বর্জ্যের ব্যাকটেরিয়ার ওপর প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন, গবেষণা পত্রটি গত ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে Scientific Reports জার্নালে প্রকাশিত হয়।
গবেষণায় ট্যানারির বর্জ্যযুক্ত ও বর্জ্যবিহীন পানির ১০টি করে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং উভয়ের কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (COD), pH, বায়োলজিকাল অক্সিজেন ডিমান্ড (BOD), দ্রবীভূত অক্সিজেন (DO), টোটাল ডিসোলভড সলিড (TDS), ক্রোমিয়ামের ঘনত্ব, ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনা করা হয়।
ট্যানারির বর্জ্যযুক্ত পানিতে BOD এবং TDS বেশি পাওয়া গেছে, যেখানে প্রতি লিটারে প্রায় ১৮.৫ গ্রাম ক্রোমিয়াম ছিল এবং DO এর মান অনেক কম। এতে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণও বেশি, যেগুলোর ৫৩.৪%, ৪৬.৭%, ৪০%, ও ৪০% যথাক্রমে সেফট্রিয়াক্সোন, এরিথ্রোমাইসিন, নালিডিক্সিক অ্যাসিড ও অ্যাজিথ্রোমাইসিনের বিরুদ্ধে কার্যকর।
ট্যানারির বর্জ্যবিহীন পানিতে এই সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। তবে বর্জ্যযুক্ত পানিতে ৩৩.৩৩% ব্যাকটেরিয়া অন্তত তিনটি অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ছিল, যাকে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (MDR) বলে। এই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট রোগের চিকিৎসা জটিল হতে পারে, কারণ একাধিক ড্রাগ এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না।
গবেষকরা ট্যানারির বর্জ্যের ভয়াবহ প্রভাব রোধে সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধনের পরামর্শ দিয়েছেন।
–––
Impact of untreated tannery wastewater in the evolution of multidrug-resistant bacteria in Bangladesh. Science Reports (2024).
DOI: 10.1038/s41598-024-71472-6
নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।