সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক ১৭ বছর বয়সী হাইস্কুল ছাত্র প্রথমবারের মতো স্বাদুপানির অ্যাঞ্জেলফিশের (Pterophyllum scalare) জিনোম সিকোয়েন্স করেছে।
ইন্দিভার মাদিরেডি (Indeever Madireddy) এই বছরের মার্চ মাসে মারা যাওয়ার পরে তার পোষা অ্যাঞ্জেলফিশ ‘ক্যালভিন’-এর জিনোম সিকোয়েন্স করে। এ ব্যাপারে সে বলে,
“যদিও আমার মাছটি মারা গিয়েছিল, আমি এটিকে আজীবন সংরক্ষণ করতে চেয়েছিলাম। তাই আমি এঞ্জেলফিশের জিনোম সিকোয়েন্স করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই আশায় যে আমি সেই তথ্য দিয়ে বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ে অবদান রাখতে পারব, পাশাপাশি আমার পোষা প্রাণীর প্রতি একটি ছোট শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারব!”
মাদিরেডি ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায় একটি কমিউনিটি ল্যাব bioCurious-এ সিকোয়েন্সিং কাজ করেছিলো। bioCurious-এ অল্প কিছু টাকা দিয়ে সদস্য হওয়ার মাধ্যমে যে কেউ উন্নত সরঞ্জামের এক্সেস পেতে পারে।
সে তার মাছের ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য ল্যাবে নেগেটিভ ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করে। সে প্রায় এক মাস সময় কাটিয়েছেন কীভাবে এর সিকোয়েন্সিং করতে হয় তা শিখতে এবং প্রস্তুতি নিতে।
সিকোয়েন্সিংটি Oxford Nanopore Technologies-এর তৈরি একটি ছোট সিকোয়েন্সার দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহে তৈরি করা হয়। ডিএনএ-র ভেতরে অবস্থিত নিউক্লিওটাইডগুলির সিকোয়েন্স তথা নিউক্লিয়িক অ্যাসিডের সিকোয়েন্স নির্ণয় করার প্রক্রিয়াটিকেই জিনোম সিকোয়েন্সিং বলে। Oxford Nanopore-এর তৈরি সিকোয়েন্সার মূলত এর ছোট ছিদ্রের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় ডিএনএ অণুর সিকোয়েন্সগুলি পড়ে ফেলে।
Nanopore সিকোয়েন্সার অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় কিছুটা কম নির্ভুল, তবে এটি অনেক দীর্ঘ একক ডিএনএ-এর সিকোয়েন্স করতে পারে। ব্যাপারটি জিনোম সিকোয়েন্সিং সফ্টওয়্যারকে সিকোয়েন্স করা সহজ করে তোলে; অনেকটা বড় এবং কম টুকরার জিগস পাজলের মতো জিনের সব টুকরো একসঙ্গে করে ফেলার মতো।
মাদিরেডির মতে, সিকোয়েন্সিং করার পর সেসকল ডেটা বিশ্লেষণ করতে আরও দুই মাস সময় লেগেছে এবং তার জন্য আরও অনেক কিছু শিখতে হয়েছে। সিকোয়েন্স ডেটা একটি পাবলিক ডাটাবেসে রাখা হয়েছে এবং গত ১৮ অক্টোবর, ২০২২ পুরো কাজটি বর্ণনা করে একটি ছোট গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
অ্যাঞ্জেলফিশ বিশ্বব্যাপী একটি জনপ্রিয় অ্যাকোয়ারিয়াম মাছ। এর জিনোম কোনও বিশেষ আশ্চর্য প্রকাশ করেনি, যা তার সহজাত মাছের মতোই।
সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য প্রায় ২ হাজার মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে যার মধ্যে মাদিরেডি ক্রাউডফান্ডিং করে প্রায় ১ হাজার মার্কিন সংগ্রহ করতে পেরেছে।
Oxford Nanopore-এর সিইও Gordon Sanghera বলেছেন,
“এটি একটি অনুসন্ধিৎসু মনোভাবের একটি চমৎকার উদাহরণ এবং আপনি যখন খরচ এবং জটিলতার মতো প্রযুক্তিগত বাধা সরিয়ে ফেলতে পারবেন তখন তরুণ বিজ্ঞানীরা কী করতে পারেন তার উজ্জল দৃষ্ঠান্ত।”
মাদিরেডি একজন প্রখর মাছ-রক্ষক এবং জীববিজ্ঞানী, এবং এর আগে সে CRISPR জিন সম্পাদনা ব্যবহার করে কাজ করেছে।
———
First Ever Whole Genome Sequencing and De Novo Assembly of the Freshwater Angelfish, Pterophyllum scalare. microPublication Biology (2022). DOI: 10.17912/micropub.biology.000654
নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।
এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।