সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অববাহিকা হলো পদ্মা-গঙ্গা নদীর অববাহিকা। হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে গঙ্গা নদী ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র নদ হিসেবে প্রবেশ করে। পরে ব্রহ্মপুত্র নদ পদ্মা হয়ে বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী মেঘনার সঙ্গে মিলিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। পানিপ্রবাহের দিক থেকে পদ্মা-গঙ্গা বিশ্বে আমাজন ও কঙ্গো নদীর পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভূমিকম্পে বদলে গিয়েছিল পদ্মা নদীর গতিপথ। নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে ১৭ জুন, ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত হয় এ গবেষণাটি।
সাম্প্রতিক সময়ে অন্যান্য নদ-নদীতেও এ ধরনের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে তবে সেগুলো কেবল উজানে। পদ্মার গতিপথের এই স্থানান্তরটি বদ্বীপে ঘটেছিল, অর্থাৎ যেখানে নদীটি বঙ্গোপসাগরে মিশেছে সেখান থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে। একইমাপের ভূমিকম্পের কারণে বন্য তৈরি হয়ে বিপদে পরতে পারে কোটি কোটি মানুষ।
নদ-নদীর চলার পথে তলদেশে পলি জমার কারণে নদীর গতিপথ পাল্টাতে পারে তবে সেই পরিবর্তন কয়েক বছর থেকে শতাব্দী পর্যন্ত সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে ঘটে। কিন্তু ভূমিকম্পের কারণে চ্যানেল-জাম্পিং এক সপ্তাহ বা দিনে ঘটতে পারে।
নদীর গতিপথ স্থানান্তরের পরে, পুরানো জলপথটি ধীরে ধীরে পলি দিয়ে ভরাট হতে থাকলেও পুরানো গতিপথের প্রমাণ থেকে যায়।
বিশাল মাত্রা ভূমিকম্পটি কবে হয়েছিল, তা জানতে ঢাকায় খোঁড়া গর্তের মাটির নমুনাগুলোর অপটিক্যাল স্টিমুলেটেড লুমিনিসেন্সস পরীক্ষা করেন গবেষকরা। গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী, এ বালির আগ্নেয়গিরি গঠিত হয়েছে আড়াই হাজার বছর আগে, অর্থাৎ মাটির কণাগুলো ২,৫০০ বছরের পুরনো। আবার সেখান থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরেও একটি বড় নদীর চ্যানেল পান বিজ্ঞানীরা। ওই চ্যানেল থেকে পাওয়া নমুনা পরীক্ষা করে দেখেন যে সেগুলোও একই সময়ের মাটির কণা।
এই আবিষ্কার ইঙ্গিত দিচ্ছে, ২,৫০০ বছর আগে নদীটির গতিপথ নাটকীয়ভাবে বদলে গিয়েছিল। আবার ২,৫০০ বছর আগে এক বড় মাত্রা ভূমিকম্প হয়েছিলো। অর্থাৎ ভূমিকম্পেই বদলে গিয়েছিল পদ্মার গতিপথ।
বাংলাদেশের এই ব-দ্বীপ অঞ্চলে, বেশিরভাগ অবকাঠামো নদী থেকে ড্রেজিং করা পলির ঢিবির উপর তৈরি করা হয়েছে এবং বন্যা ধেকে বাঁচতে উঁচু স্তূপ করে তার ওপর করা হয়েছে। এর ফলে অনুরুপ কোনো ভূমিকম্প হয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হলে ১৭ কোটির মতো মানুষ বিপদে পরবে।
———
Cascading hazards of a major Bengal basin earthquake and abrupt avulsion of the Ganges River. Nature Communications (2024).
DOI: 10.1038/s41467-024-47786-4.
নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।
এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।