সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
আজ থেকে ৪৫ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে যাত্র শুরু করেছিলো ভয়েজার ১ ও ২। তখন থেকেই মহাকাশ অনুসন্ধানের সীমানা ঠেলে দিয়েছে তারা। ভয়েজার মিশন মুলত চার বছরের ছিলো; বৃহস্পতি এবং শনিকে পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে। সমস্ত প্রত্যাশা ছাড়িয়ে এখনও এগিয়ে চলছে এরা। ভয়েজান পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে (২৩.৩৩ বিলিয়ন কিলোমিটার) থাকা মানবসৃষ্ট কোনো বস্তু। এই রেকর্ডটি সম্ভবত কয়েক দশক ধরে অবিচ্ছিন্ন থাকবে।
সায়েন্টিফিক আমেরিকানের দেয়া তথ্য মতে, মহাকাশযানটির চালিকা শক্তি কমানো বা কিছু সিস্টেম বন্ধের সিদ্ধান্তের অর্থ হল তাদের আয়ু আরও কয়েক বছর বাড়ানো। নাসার উদ্দেশ্য এদের আয়ু ২০৩০-এ নিয়ে যাওয়া।
মহাকাশযানদুটি তেজস্ক্রিয় প্লুটোনিয়াম দ্বারা চালিত, যা কয়েক দশক ধরে ছোট অনবোর্ড কম্পিউটারগুলিকে চলমান রেখেছে। ভয়েজরকে এক বছর চালাতে ৪ ওয়াট শক্তির প্রয়োজন পরে কিন্তু এর প্লুটনিয়াম চালিত শক্তি উৎসের বেশি শক্তি অবশিষ্ট নেই যার ফরে ২০৩০ পর্যন্ত বর্ধিত করতে শক্তির ব্যবহার কমাতে হবে।
নাসা জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির একজন বিজ্ঞানী লিন্ডা স্পিলকার সায়েন্টিফিক আমেরিকানকে বলেছেন,
“যদি সবকিছু সত্যিই সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে হয়তো আমরা ২০৩০-এর দশকে মিশন বাড়ানোর সুযোগ পেতে পারি। এটা শুধু শক্তির উপর নির্ভর করে। তবে এটিই সীমাবদ্ধ বিন্দু। এর থেকে বেশি সম্ভব হবে না।“
১৯৯০ সালে, ভয়েজার ১ সেই বিখ্যাত “Pale Blue Dot” ছবি তুলেছিল। সূর্য থেকে ৫ বিলিয়ন কিলোমিটার দূর থেকে পৃথিবীর কত ছোট এবং তুচ্ছ।
ঠিক এ মূহুর্তে ভয়েজার পৃথিবী থেকে কতদূরে আছে সেটা এই লিঙ্কে গিয়ে দেখতে পারবেন।
ভয়েজার যান দুটি এখন যেখানে আছে সেটা সাধারণত আমাদের সৌরজগতের সীমার বাইরে হিসাবে বিবেচিত হয়। ভয়েজার ১ ২০১২ সালে এবং ভয়েজার ২ ২০১৮ সালে “ইন্টারস্টেলার স্পেস (সূর্যের মহাকর্ষ বলের বাইরে)”-এ পৌঁছেছে।
ভয়েজারে এত বছর আগের পুরোনো ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র থাকা সত্ত্বেও সময়ের পরীক্ষায় অসাধারণভাবে টিকে আছে। যানদুটিতে থাকা আদিম (!) কম্পিউটার চালানোর জন্য খুব বেশি শক্তির প্রয়োজন হয় না। ভয়েজারে যন্ত্র দ্বারা সংগৃহীত সমস্ত ডেটা একটি এইট-ট্র্যাক টেপ রেকর্ডারে সংরক্ষণ করা হয় এবং একটি মেশিন ব্যবহার করে ভেতরের তথ্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়। পাঠানোর কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রটি একটি রেফ্রিজারেটরের আলোর বাল্বের মতোই সীমিত শক্তি ব্যবহার করে।
ক্রেডিট: NASA/JPL
যেহেতু শক্তি হ্রাস পাচ্ছে, নাসাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন যন্ত্রগুলি চালু থাকবে আর কোনগুলি বন্ধ করবে যাতে একে ২০৩০ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা যায়।
২০৩০ সালের পর ভয়েজার সম্ভবত পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করার ক্ষমতা হারাবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, এর মিশন শেষ হয়ে যাবে।
উভয় ভয়েজারেই “Golden Record” নামের একটি ১২-ইঞ্চি সোনার ধাতুপট্টাবৃত রেকর্ড আছে। এই ডিক্সে ১১৫টি ছবি, বাংলা সহ ৫৫ টি ভাষায় শুভেচ্ছাবণী, বৃষ্টি এবং মানুষের হৃদস্পন্দন সহ আরো ৯০ মিনিটের সাউন্ড সংরক্ষণ করা আছে।
ক্রেডিট: NASA/JPL-Caltech
প্রতিদিন আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।