সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
রহস্যময় ষড়ভুজাকার হীরা প্রাকৃতিকভাবে পৃথিবীতে তৈরি হয় না। ধারণা করা হয় প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে একটি বামন গ্রহ (dwarf planet) এবং একটি বড় গ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষের সময় অদ্ভুত ষড়ভুজাকার হীরা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায় যা অবশেষে পৃথিবীতে পড়ে। উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার এমনই চারটি উল্কাপিণ্ডে সেই রহস্যময় ষড়ভুজাকার হীরা আবিষ্কৃত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের RMIT বিশ্ববিদ্যালয়ের Alan Salek এ ব্যাপারে বলেন,
“আবিষ্কারটি সত্যিই উত্তেজনাপূর্ণ কারণ এই ফিল্ডের কিছু লোক ছিল যারা সন্দেহ করেছিল যে এই উপাদানটির অস্তিত্ব আছে কিনা।”
ষড়ভুজাকার হীরা, সাধারণ হীরার মতোই কার্বন দিয়ে তৈরি, তবে তাদের পরমাণুগুলি ঘনক্ষেত্রের পরিবর্তে ষড়ভুজাকার কাঠামোতে সাজানো থাকে।
লন্সডেলাইট (lonsdaleite) নামেও পরিচিত, ষড়ভুজ হীরা প্রথম ১৯৬০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতে উল্কাপিণ্ডে প্রথম তুলে ধরা হয়েছিল। তবে পূর্বে আবিষ্কৃত স্ফটিকগুলি এত ছোট ছিল (ন্যানোমিটার আকারের) যে তারা সত্যিই ষড়ভুজাকার হীরা কিনা তা নিশ্চিত করা কঠিন ছিল।
বৃহত্তর স্ফটিক খোঁজার জন্য, Salek এবং তার সহকর্মীরা ১৮টি উল্কাপিণ্ডের নমুনা দেখতে একটি শক্তিশালী ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করেন। ১৮টির মধ্যে একটি অস্ট্রেলিয়ার এবং বাকিগুলো উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার।
তারা আফ্রিকার চারটি উল্কাপিণ্ডে ষড়ভুজ হীরা খুঁজে পেয়েছেন, কিছু স্ফটিক আকারে মাইক্রোমিটার পর্যন্ত যা আগের আবিষ্কারের তুলনায় প্রায় ১,০০০ গুণ বড়। এটি দলটিকে অস্বাভাবিক ষড়ভুজ কাঠামো নিশ্চিত করতে সাহায্য করেছে।
Salek বলেন,
“এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার কারণ এখন আমাদের কাছে বৃহত্তর স্ফটিক রয়েছে। কীভাবে সেগুলি তৈরি হয়েছে তা জানতে পারবো এবং সম্ভবত ল্যাবে সেই প্রক্রিয়াটিকে প্রতিলিপি করতে পারবো যাতে সে সম্পর্কে আমরা আরও ভাল ধারণা পেতে পারি।”
দলের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় যে কার্বনের একটি রুপ, গ্রাফাইট এবং হাইড্রোজেন, মিথেন, অক্সিজেন এবং সালফার রাসায়নিকের একটি সুপারক্রিটিকাল তরলের মধ্যে বিক্রিয়ার ফলে এ ষড়ভুজ হীরা তৈরি হয়েছে। গঠনের উপর ভিত্তি করে ধারণা করা হয় যে ষড়ভুজ হীরা সাধারণ হীরার তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি শক্ত।
———
Sequential Lonsdaleite to Diamond Formation in Ureilite Meteorites via In Situ Chemical Fluid/Vapor Deposition, Proceedings of the National Academy of Sciences (2022), DOI: 10.1073/pnas.2208814119
নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।
এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।