সর্বশেষ বিজ্ঞান সংবাদ বিজ্ঞানবার্তা-র গুগল নিউজ চ্যানেলে।
যখনই আপনি বায়োমেট্রিক্সের কথা শোনেন বা ভাবেন, তখন প্রথম যে জিনিসগুলি আপনার মাথায় আসে তা নিশ্চই ফিঙ্গারপ্রিন্ট কিংবা ফেইস স্ক্যান? এখনকার সকল ফোনের একদম কমন ফিচার এসব বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন সিস্টেম। তথ্য ও প্রযুক্তির এই যুগে, বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন মূল্যবান সম্পদ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
নতুন এক গবেষণায়, গবেষকরা বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা টুলকিটের জন্য একটি নতুন সম্ভাব্য বিকল্প তৈরি করেছেন: সেটা হলো ‘নিঃশ্বাস-প্রঃশ্বাস’। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন হবে আপনার নিঃশ্বাস-প্রঃশ্বাসে মাধ্যমে। Chemical Communications জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র মতে, জাপানের Kyushu University-র Institute for Materials Chemistry and Engineering-এর গবেষকরা University of Tokyo-এর সহযোগিতায় একটি ঘ্রাণশক্তির সেন্সর তৈরি করেছেন যা কোনো ব্যাক্তির নিঃশ্বাস-প্রঃশ্বাসে পাওয়া বিভিন্ন যৌগ বিশ্লেষণ করে তাকে সনাক্ত করতে সক্ষম।
মেশিন লার্নিংয়ের সাহায্য নিয়ে এই ‘কৃত্রিম নাক’ ২০ জন ব্যক্তিকে ৯৭% নির্ভুলতা সাথে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে তার ১৬-চ্যানেল সেন্সর অ্যারে দ্বারা তৈরি olfactory sensor system বা ঘ্রাণশক্তি সেন্সর সিস্টেমের মাধ্যমে।
ক্রেডিট: Kyushu University/Yanagida Lab
গবেষণক Chayanut Jirayupat বলেন,
বর্তমানে থাকা সকল বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন পদ্ধতি প্রতিটি ব্যক্তির শারীরিক স্বতন্ত্রতার উপর নির্ভর করে, কিন্তু তারা foolproof নয়। শারীরিক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অনুলিপি তৈরি করা যেতে পারে সহজেই। আবার কেউ উক্ত অঙ্গে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে বিকৃত হয়ে যেতে পারে। প্রত্যেক মানুষের একটি স্বতন্ত্র ঘ্রাণ আছে। বর্তমানে, মানুষের ঘ্রাণ; বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশনের একটি নতুন শ্রেণী হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে। কিন্তু ত্বকে তৈরি সেই অনন্য ঘ্রাণ যথেষ্ট পরিমানে তৈরি হয় না, তাই সেটাকে শনাক্ত করা বেশ কঠিন। আমাদের উদ্ভাবিত পদ্ধতি আপনি কে তা নিশ্চিত করতে আপনার নিঃশ্বাস-প্রঃশ্বাসের অনন্য রাসায়নিক গঠন ব্যবহার করে।
বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশনের জন্য কোন যৌগগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে তা দেখার জন্য দলটি বিভিন্ন ব্যাক্তির নিঃশ্বাস-প্রঃশ্বাস বিশ্লেষণ করা শুরু করে। তারা মোট ২৮টি যৌগ কার্যকরী বিকল্প হিসাবে চিহ্নিত করেছে যেগুলো ব্যবহার করা সম্ভব বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশনের জন্য।
এর উপর ভিত্তি করে, তারা ১৬টি চ্যানেল সহ একটি ঘ্রাণযুক্ত সেন্সর অ্যারে তৈরি করে, যার প্রত্যেকটি যৌগগুলির একটি নির্দিষ্ট পরিসর সনাক্ত করতে পারে। তারপর সেন্সর দ্বারা ইনপুট নেয়া এসকল সেন্সর ডেটা একটি মেশিন লার্নিং সিস্টেমে পাস করে প্রতিটি ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের গঠন বিশ্লেষণ করে আগে থাকা প্রোফাইলের সাথে মিলানোর জন্য।
ছয় জনের শ্বাস-প্রশ্বাসের নমুনা নিয়ে প্রোফাইল তৈরি করে তারপর গবেষণকরা উদ্ভবিত olfactory sensor system ব্যবহার করেন সনাক্ত করার কাজে। গবেষকরা দেখেছেন যে, এটি 97.8% গড় নির্ভুলতার সাথে ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে পারে। ২০ জনের ক্ষেত্রেও নির্ভুলতার একই ছিলো।
তবে বলা বাহুল্য যে এই পদ্ধতি আমার-আপনার স্মার্টফোনে আসতে আরো বহু পথ পাড়ি দিতে হবে।
———
Breath odor-based individual authentication by an artificial olfactory sensor system and machine learning. Chemical Communications, 2022; 58 (44): 6377 DOI: 10.1039/d1cc06384g
প্রতিদিন আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের নিউজলেটারে এবং ফলো করুন আমাদের ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুক-এ। এছাড়াও যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

এই নিবন্ধটি Creative Commons Attribution-NoDerivatives 4.0 International License-এর অধীনে লাইসেন্সকৃত। পুনঃপ্রকাশের জন্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশিকা দেখুুন।